জ্বরের অনেক কারণ থাকতে পারে তৎসহ জ্বরের বিভিন্ন উপসর্গ থাকে। নীচে জ্বরের উপসর্গ অনুযায়ী হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা আলোচনা করা হল।
উপসর্গ অনুযায়ী জ্বরের হোমিওপ্যাথি ওষুধ (homeopathy medicine for fever)
স্বল্প-বিরাম জ্বর,হঠাৎ জ্বর আসে, যন্ত্রণাদির পর হঠাৎ জ্বর কমে যায়। রোগীর চোখমুখ থম্থমে,লাল দেখায়। গায়ের তাপমাত্রা খুব বেশি থাকে,মাঝে মাঝে ঘাম হয়,ঘাম গরম হয়।রোগী প্রলাপ বকতে থাকে। শরীরে অত্যন্ত ব্যাথা। পিপাসা খুব থাকে। ঘুমের মধ্যে ভয়ানক স্বপ্ন দেখে চমকে ওঠে – Belladonna ।
জ্বর আসার আগে গায়ে ব্যাথা, গা-হাত কাম্রানি,হাই তলা,চোখ জ্বালা। জ্বর এলে প্রথমে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে শীত ও কাঁপুনি আসে,রোগী খুব ছটপট করে। গায়ের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে কাশি,পিপাসা কিছুই থাকে না,গায়ে আমবাতের মতো উদ্ভেত হয় ও চুলকায়, স্থির হয়ে বসতে বা শুতে পারে না – Rhus tox ।
বৃষ্টিতে ভিজে ঠাণ্ডা লেগে জ্বর, সর্দি জ্বর বা জ্বরে একেবারে ঘাম থাকে না, পিপাসা খুব থাকে, রোগীর অন্তর্দাহ, ছটফটানি, তাপমাত্রা খুব বেশি থাকে ও অবিরাম জ্বর, জ্বর বৃদ্ধির সাথে কাশির বৃদ্ধি, কাশলে মাথায় ও বুকের ব্যাথা বাড়ে – Aconite ।
রোগী চোখ বন্ধ করে একেবারে চুপ হয়ে পড়ে থাকে,নড়াচড়া করলে ব্যাথা বাড়ে, বুক ধড়পড় করে, চোখ ও মাথা খুব ব্যাথা করে,গায়ে ব্যাথা থাকে, রোগী উঠে বসলে বা মাথা তুললে গা বমি বমি করে ও মাথা ঘোরে, মুখের স্বাদ বিস্বাদ হয় ও তেতো হয়, অল্প ঘাম থাকতে পারে – Bryonia ।
আরও পড়ুন ঃ সর্দি ও কাশির হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা।
রোগী তন্দ্রাচ্ছন্ন ও অঘোরভাবে চুপ করে পড়ে থাকে, কথাও বলে না ও চেয়েও দেখে না। পিপাসা তেমন একটা থাকে না। স্নায়ু দৌর্বল্যের জন্যে রোগী চুপ করে থাকে।বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এইরকম লক্ষণ থাকলে – Gelsemium ।
টাইফয়েড-জ্বর, সমস্ত শরীরে ভয়ানক ব্যাথা,তলপেট ফাঁপা কিন্তু নরম, তলপেটে গড়গড় শব্দ ও ব্যাথা, শীতবোধ, কখন বলে বিছানা খুব শক্ত, শুয়ে থাকলে বেদনার বৃদ্ধি, মাথাভার বোধ ও শিরঃপীড়া,কিছু জিজ্ঞাসা করলে আংশিক উত্তর দেয় ও পুনরায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে, স্বল্পবিস্তর প্রলাপ বকে। নিশ্বাস, ঘাম, মল্মুত্র সবেতেই দুর্গন্ধ – Baptisia Q।
জ্বর প্রায় একদিন অন্তর আসে, শীতাবস্থার পূর্বে হাত পায়ের হাড়ের ভেতর খুব যন্ত্রণা, শীতাবস্থায় – পিপাসা থাকেনা, শীত কোমরের ওপর -পীঠ থেকে আরম্ভ হয়, শীত কমে আসলে গা বমি বমি ভাব (পিত্ত বমি হয়) , উত্তাপবস্থায় – পিপাসা কম থাকে, হাড়ের ভেতর ব্যাথা, নড়লে চড়লে শীতবোধ হয়। জ্বরের সাথে প্রস্রাবে জ্বালা-যন্ত্রণা ও প্রস্রাবের সাথে শ্লেষ্মার মতো পদার্থ নির্গমন – Eupotarium Purp 200 । ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে এই ওষুধ খুব ভালো ফল দেয়।
আরও পড়ুন ঃ অর্শের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
রোগী ঠিক যেন পাগলের মতো প্রলাপ বকে, রোগী কখনো স্থির হয়ে থাকতে পারে না, কখন সোজা হয়ে লম্বা ভাবে,একবার আড়ভাবে, কখন হাঁটু ও পা গুটিয়ে শোয়। রোগী একা বা অন্ধকারে থাকতে ভয় পায়। রোগী বালিশ মাথায় দিয়ে শুয়ে থাকে, হঠাৎ মাথা তুলে কি যেন দেখে আবার শুয়ে পড়ে, গলা শুকনো থাকা সত্ত্বেও জলপান করতে চায় না। চোখ সম্পূর্ণ খোলা থাকে, চোখের মণি প্রসারিত, চাউনি পাগলের মতো, অঙ্গ প্রতঙ্গ কাঁপতে থাকে – Stramonium ।
অজ্ঞান অচৈতন্যভাব ধীরে ধীরে আসে, হাতের আঙ্গুল ও বিছানার চাদর খোঁটে,ওপরের দিকে হাত বাড়িয়ে যেন কিছু দেখার চেষ্টা করে, জিভ শুকনো,কথা বলতে পারে না, রোগী অসাড়ে মল্মুত্র ত্যাগ করে বা প্রস্রাব বন্ধ থাকে – Hyoscyamus ।
পুনঃপুন জ্বর ও ঘাম,জ্বরে খুব দুর্বল হয়ে পড়ে, ঘাম এতো বেশি হয় যে যেন মনে হয় স্নান করে উঠে এসেছে। হেপটিক জ্বর – রোগীর ক্ষিদে খুব ও আহার সত্ত্বেও দিন দিন রোগা হয়ে যায় – Arsenic iod ।
এক সপ্তাহ অন্তর একদিন শীত দিয়ে জ্বর আসে ও ঘাম দিয়ে ছেড়ে যায় – Ammon Mur ।
ঠিক বেলা বা রাত্রি ১১টার দিকে জ্বর আসে অর্থাৎ জ্বর বেলা ১১টায় এলে রাত ১১ টায় ছাড়ে আবার রাত ১১ টায় এলে বেলা ১১ টায় ছাড়ে। সাথে মনে হয় বুকে ভারী চেপে আছে মনে হয় ও দমবন্ধের ভাব থাকে – Cactus Grandi ।
প্রথমে নিম্নশক্তি অর্থাৎ ৬ বা ৩০ প্রয়োগ করবেন। আর যদি রোগী বেশি দিন ধরে ভোগেন তাহলে ২০০ প্রয়োগ করবেন। ২/৩ ফোঁটা করে ২ বার খালি পেটে সেবন করবেন।
আরও পড়ুনঃ অ্জীর্ণ ও অম্বলের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
অন্য রোগের হোমিওপ্যাথি চিকিত্সার তথ্য পেতে উপরের কোণায় মেনুতে যান। তারপরে হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সায় ক্লিক করুন এবং আপনি যে রোগটি খুঁজছেন তা নির্বাচন করুন।