অর্শ রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও কার্যকরী ঔষধ

অর্শ রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ওষুধের বিবরণ নিচে দেওয়া হলো।

অর্শ এমন একটি রোগ যাতে পৃথিবীর শতকরা ৭০ জন ভোগেন কিন্তু খুব কম জনই এর চিকিৎসা করান। অনেকে এই রোগের কথা বলতে দ্বিধা বোধ করেন বা বলতে লজ্জা করেন। এই রোগের সঠিক চিকিৎসা সঠিক সময় না করালে সারা জীবন ভুগতে হয়। এর ফলে শরীরে রক্তশূন্যতা বা মলদ্বারে সংক্রমণ ও হতে পারে। চরম পরিণতি হিসেবে রেকটাম ক্যান্সার ও হতে পারে। সুতরাং খুব তরুণ অবস্থা থেকে এর চিকিৎসা করালে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

অর্শ বা পাইলস রোগটি কি?

মলত্যাগ এর সময় অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করার ফলে, জন্মগত দুর্বল ধমনী, দীর্ঘ দিনের কোষ্ঠ কাঠিন্য, দীর্ঘ দিনের কাশি বা কোনো ভারী বস্তু তোলার জন্য মলত্যাগের সময় বাথ্যাহীন রক্তপাত, মলদ্বারে চুলকানি বা বাথ্যা, জ্বালাপোড়া ভাব বা মলদ্বার এর ফোলা বা বাহিরে বেরিয়ে আসা অনুভব করা ইত্যাদি হলো অর্শ এর লক্ষণ।

অর্শ রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

আরও পড়ুনঃ শারীরিক দুর্বলতা ও অক্ষমতার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা

পাইলস বা অর্শ রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ঔষধ

Hamamelis Vir Q – মলত্যাগের সময় খুব রক্তপাত হয় ও সঙ্গে খুব ব্যাথা অনুভব হয়। তাহলে সকাল সন্ধ্যা ১০ ফোঁটা করে সেবন করুন।

Aesculus Hip Qরক্ত খুবই স্বল্প বা রক্ত না থাকে কিন্তু কোমরে বেদনা, মলদ্বারে টাটানি ব্যাথা, মলত্যাগের পরেও ব্যাথা বা জ্বালা। সকালে ও সন্ধ্যায় অল্পজলে ১০ফোঁটা করে সেবন করুন।

Collinsonia Q – মলের সাথে রক্ত, মলদ্বারে প্রচুর ব্যাথা ও জ্বালা ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে গ্যাস জমে। সকালে ও সন্ধ্যায় অল্প জলে দিয়ে সেবন করুন।

Acid Nit 200 – মলদ্বারে যেন কাঁটা ফোটানো আছে এরকম মনে হয়। সকাল সন্ধ্যা ২/৩ ফোঁটা খালি পেটে সেবন করুন।

Nux Vom 30 – যারা অতিরিক্ত চা কফি খান, সারাদিন বসিয়া থাকেন,কোনো কাজ বা পরিশ্রম করেন না। তাদের অর্শে সকাল সন্ধ্যায় ২/৩ ফোঁটা করে খালি পেটে সেবন করুন।

Paeonia off Q – অর্শ সহ মলদ্বারে ফাটা ঘা, ফিশ্চুলা, ফিশার। তাহলে সকাল সন্ধ্যা ১০ফোঁটা করে সেবন করুন।

Calcarea Fluorica 200কোষ্ঠ কাঠিন্য সহ অন্তর্বলী যুক্ত অর্শে সকাল সন্ধ্যায় ২/৩ ফোঁটা সেবন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

Sulphur 30 – অনেকদিনের পুরনো অর্শে ভুগলে, মলদ্বারে হুলফোটানো ব্যাথা। তিন মাত্রা সেবন করুন।

Acid Mur 200 – প্রসূতি বা শিশুদের অর্শে, প্রশ্রাবের সময় বলী বেরিয়ে আসে, মলদ্বারে খুব ব্যাথা থাকলে সকাল ও সন্ধ্যেতে ২/৩ ফোঁটা করে সেবন করুন।

Calcarea Fluorica 12x – উপরোক্ত অর্শ রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ওষুধের সাথেও এই বায়োকেমিক ওষুধ ব্যবহারে চমকপ্রদ ফল পাওয়া যায়। এছাড়াও বায়ো কম্বিনেশন নম্বর 17 (BC 17) খেলেও খুবই ভালো ফল পাওয়া যায়। বায়োকেমিক ওষুধ গুলি ৪টি করে ট্যাবলেট ৪বার একটু উষ্ণ জলের সাথে সেবন করুন।

মলদ্বারে ব্যাথা,যন্ত্রনা,জ্বালা বা সংক্রমণ হলে বাহ্যিক প্রয়োগ এর জন্যে Aesculus Ointment ব্যবহার করুন।

অর্শ রোগের কয়েকটি নিম্নলিখিত সাবধানতার অবলম্বনের প্রয়োজন

  • পায়ুপথের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।
  • ফুলে গেলে বরফ দেওয়া যায়।
  • প্রতিদিন প্রচুর আঁশযুক্ত (fibre) সবজি, ফলমূল ও খাবার গ্রহণ করবেন; মাংস, কম আঁশ ও বেশি চর্বিযুক্ত খাবার, ফাস্টফুড ইত্যাদি পরিহার করুন।
  • প্রচুর তরল ও দিনে ছয়-সাত  লিটার জল পান করুন।
  • কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসা করুন, মলত্যাগে কখনো বেশি চাপ প্রয়োগ করবেন না, আটকে রাখবেন না।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন, নিয়মিত ব্যায়ামে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে।
  • তেল মশলা জাতীয় খাবার খাওয়া বর্জনীয়।

আরও পড়ুনঃ সর্দি কাশির হোমিওপ্যাথি ঔষধ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top